Rectifier (রেক্টিফায়ার)
আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আমি মোঃ সোহেল রানা জুনিয়র সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশ অটোমেশন টেকনোলজিস। এখন থেকে আমি নিয়মিত আপনাদের সাথে ইলেক্ট্রিক্যাল, ইলেক্ট্রনিক্স এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশনের যে বিষয় গুলো জানি , সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। আশাকরি অনেকেই উপকৃত হবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি। আজ আমি আলোচনা করবো রেক্টিফায়ার নিয়ে।
রেক্টিফায়ার ইলেকট্রনিক্স বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ টপিক। আমরা ছোট ছোট প্রজেক্টে রেক্টিফায়ার ব্যবহার করে থাকি। আজ আমরা রেক্টিফায়ারের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্বন্ধে জানতে চেষ্টা করবো।
রেক্টিফায়ার কাকে বলে ? এর কাজ ও প্রকারভেদ ।
রেক্টিফায়ারঃ যে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের সাহায্যে অল্টারনেটিং কারেন্টকে ডাইরেক্ট কারেন্টে রূপান্তরিত করা হয় তাকে রেক্টিফায়ার বলে।
রেক্টিফায়ারের কাজঃ সংজ্ঞা থেকে বুঝা যাচ্ছে রেক্টিফায়ারঅল্টারনেটিং কারেন্টকে ডাইরেক্ট কারেন্টে রূপান্তরিত করে।
প্রকারভেদঃ রেকটিফায়ার প্রধানত দুই প্রকারঃ
১। হাফ ওয়েভ রেক্টিফায়ার।
২। ফুল ওয়েভ রেক্টিফায়ার।
হাফ ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ হাফ ওয়েভ রেকটিফায়ার হলো এমন একটি রেক্টিফায়ার যেটা ইনপুটের পজেটিভ হাফ সাইকেলকে কনভার্ট করে আউটপুটে পালসেটিং ডিসিতে রূপান্তরিত করে থাকে। সবচেয়ে সহজ রেক্টিফায়ার সার্কিট হচ্ছে হাফ ওয়েভ রেক্টিফায়ার সার্কিট।
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার মানে পূর্ণ তরঙ্গ কে রেকটিফাই করবে। অর্থাৎ ফুল ওয়েভ রেক্টিফায়ারের ইনপুটে যখন পূর্ণ সাইকেল দেওয়া হবে তখন পজিটিভ সাইকেলের জন্য ও নেগেটিভ সাইকেলের জন্য এর আউটপুটে কারেন্ট ফ্লো হবে।
এই কাজটি করবে মূলত দুটি ডায়োডের সাহায্যে। ইনপুট ভোল্টেজের পজিটিভ হাফ সাইকেলের জন্য একটি ডায়োড কাজ করবে ও নেগেটিভ হাফ সাইকেলের জন্য অপরটি ডায়োডটি কাজ করবে। অর্থাৎ কারেন্ট সবসময় একই ডিরেকশনে লোডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে।
ফুল ওয়েভ রেক্টিফায়ারকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১। ফুল ওয়েভ সেন্টার টেপ রেকটিফায়ার।
২। ফুল ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার।
হাফ ওয়েবের তুলনায় ফুল ওয়েব রেক্টিফায়ারের সুবিধা-অসুবিধা
সুবিধাঃ
- হাফ ওয়েভ রেকটিফায়ার তুলনায় ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ারের দক্ষতা বেশি।
- ফুল ওয়েভের উভয় হাফ সাইকেল ডিসি হয়।
- ফুল ওয়েভের আউটপুট ভোল্টেজ বেশি।
- রিপল ফ্যাক্টরের মান কম।
- হাফ ওয়েভের চেয়ে ডিস্টরশন কম।
অসুবিধাঃ
- এই ব্যবস্থায় ফুল ওয়েভ রেক্টিফায়ারে কম্পোনেন্টের পরিমাণ বেশি লাগে।
- ফুল ওয়েভ সিস্টেম যদি সেন্টার টেপ হয়ে থাকে তাহলে এই ব্যবস্থায় সেন্টার হারিয়ে গেলে বাহির করা বেশ কঠিন।
হাফ ওয়েব এবং ফুল ওয়েব রেক্টিফায়ার এর মাঝে পার্থক্য
হাফ ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ
- হাফ ওয়েভ এর সাহায্যে এসি ইনপুট পজেটিভ অর্ধ সাইকেলকে ডিসি রুপে আউটপুটে পাওয়া যায়।
- ভোল্টেজ কম পাওয়া যায়।
- কারেন্ট কম পাওয়া যায়।
- এতে একটি মাত্র ডায়োডের প্রয়োজন হয়।
- এর দক্ষতা কম।
- এই রেকটিফায়ার এর নয়েজ কম।
- এই রেকটিফায়ারের ব্যবহার অনেক কম।
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ
- ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ারের সাহায্যে এসি ইনপুট সিগনালের উভয় অর্ধ সাইকেলকে ডিসি রূপে আউটপুট পাওয়া যায়।
- ভোল্টেজ বেশি পাওয়া যায়।
- কারেন্ট বেশি পাওয়া যায়।
- একাদিক ডায়োডের প্রয়োজন হয়।
- এর দক্ষতা বেশি।
- এর রেকটিফায়ার নয়েজ বেশি।
- এই রেকটিফায়ারের ব্যবহার বেশি।
ফিল্টার সার্কিট কাকে বলে ও প্রকারভেদ?
আমরা রেকটিফায়ারের আউটপুট থেকে যে ডি.সি ভোল্টেজ পেয়ে থাকি তা বিশুদ্ধ ডিসি নয়, তা সাধারণত পালসেটিং ডিসি। ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের জন্য বিশুদ্ধ ডি.সি ভোল্টেজ প্রয়োজন।
একারনে মূলত ফিল্টার সার্কিট ব্যবহার করে পালসেটিং ডিসিকে বিশুদ্ধ ডিসিতে রূপান্তরিত করা হয়। বিশুদ্ধ ডিসি করতে যে সার্কিট ব্যবহার করা হয় তাকে ফিল্টার সার্কিট বলে।
প্রকারভেদঃ
ফিল্টার সার্কিট প্রধানত তিন প্রকার।
১) প্যারালাল বা শান্ট ক্যাপাসিটর ফিল্টার।
২) সিরিজ ইন্ডাক্টর ফিল্টার।
৩) ইন্ডাক্টর ও ক্যাপাসিটর ফিল্টার।
আশাকরি সবাই বুঝতে পেরেছেন।এর পরে যদি কারো কিছু বলার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এ জানাবেন। লেখার ভিতরে কোন ভুল থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন । আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাই সুস্থ থাকেন ভাল থাকেন।
***খোদা-হাফেজ***
********
******
****
**