এসি কারেন্ট ও ডিসি কারেন্ট নিয়ে আলোচনা।
এসি কারেন্ট ও ডিসি কারেন্ট নিয়ে আলোচনা।
আসসালামু আলাইকুম। আশাকরি সবাই ভাল আছেন। আমি আমিনুল ইসলাম জুনিয়র সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার বাংলাদেশ অটোমেশন টেকনোলজিস। এখন থেকে নিয়মিত আপনাদের সাথে আমার জানা বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করব। আশাকরি অনেকেই উপকৃত হবেন। আজ আমি আলোচনা করব এসি কারেন্ট ও ডিসি কারেন্ট।বর্তমান যুগে কারেন্ট ছাড়া কোন কিছু কল্পনা করা যায় না।তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।
(বিঃ দ্রঃ বাংলাদেশ অটোমেশন টেকনোলজিস এ Delta PLC এর উপর এক ফ্রি সেমিনারেরআয়োজন করা হয়েছে। তাই আপনারা সকলে আমন্ত্রিত। রেজিস্ট্রেশন ।
এসি কারেন্ট কাকে বলে?
এসি পূর্ণ নাম হলো অল্টারনেটিং কারেন্ট যার বাংলা অর্থ পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎ। এর মানে এটি সবসময় পর্যায়ক্রমে পরিবর্তনশীল হবে। প্রত্যেক পর্যায়ে এটি এর বিপরীত ধর্মে রূপান্তরিত হবে। অর্থাৎ এই কারেন্টের একটি দিক ধনাত্মক(পজেটিভ) ও এর কিছু সময় পরে ঋণাত্মক(নেগেটিভ) হবে। প্রথমে যেটি পজেটিভ ছিলো এরপরেই সেটি নেগেটিভ হবে।
তাহলে বলা যায়, “সময়ের সাথে যে কারেন্টের মান পরিবর্তীত হয় তাকে এসি কারেন্ট বলে।”
এসি কারেন্ট:
উপরে চিত্র দেখলে বুঝতে পারবো যে, x অক্ষ বরাবর সময় এবং y অক্ষ বরাবর কারেন্ট দিয়ে দিক নির্দেশনা করা হয়েছে। এথেকে বুঝা যাচ্ছে সময়ের সাথে কারেন্টের মান পরিবর্তন হচ
ডিসি কারেন্ট কাকে বলে?
ডিসি কারেন্ট হলো ডাইরেক্ট কারেন্ট বা অপরিবর্তনশীল কারেন্ট। সুতারাং বুঝায় যাচ্ছে এই কারেন্টের মান পরিবর্তিত হবে না। ডিসি কারেন্টের দুটি দিক থাকে যার একটি হচ্ছে পজেটিভ ও
অন্যটি হচ্ছে নেগেটিভ।তাহলে বলা যায়, “কারেন্ট যা শুধুমাত্র একটি ডিরেকশনে প্রবাহিত হয় তাই ডিসি কারেন্ট’।
ডিসি কারেন্ট:
উপরের চিত্রে, x অক্ষ বরাবর সময় এবং y অক্ষ বরাবর কারেন্ট এর দিক নির্দেশনা করা হয়েছে। চিত্রটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করলে বুঝা যায় যে, সময় পরিবর্তন হবার সাথে সাথে কারেন্টের মান পরিবর্তন হচ্ছে না। অর্থাৎ 1A কনস্ট্যান্ট আছে।
এসি কারেন্ট ডিসি কারেন্ট এর মাঝে প্রার্থক্য:
১) উৎস বা Source:
এসি সার্কিটে জেনারেটর উৎস হিসেবে ব্যবহিত হয়।
ডিসি সার্কিটে উৎস হিসেবে ব্যাটারি বা ডিসি জেনারেটর ব্যবহিত হয়।
২) উপাদান:
এসি সার্কিটে উপাদান হিসেবে রেজিস্ট্যান্স, ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স ব্যবহার হয়।
ডিসি সার্কিটে উপাদান হিসেবে শুধুমাত্র রেজিস্ট্যান্স ব্যবহার
৩) ফ্রিকুয়েন্সির প্রভাব:
এসি সার্কিটে ফ্রিকুয়েন্সির প্রভাবে ইন্ডাকট্যান্স ও ক্যাপাসিট্যান্স এর মান কমে ও বাড়ে।
ডিসি সার্কিটে ফ্রিকুয়েন্সির কোন প্রভাব নেই।
৪) যোগ-বিয়োগ হিসাব:
এসি সার্কিটে ভোল্টেজ ও কারেন্টের মধ্যে ৯০ ডিগ্রী ফেজ এঙ্গেল বা ফেজ প্রার্থক্য থাকে যার ফলে ভোল্টেজ ও কারেন্টেকে গাণিতিকভাবে যোগ-বিয়োগ পরিবর্তে ভেক্টর যোগ-বিয়োগ করতে হয়। ডিসি সার্কিটে ভোল্টেজ ও কারেন্টকে গাণিতিকভাবে যোগ-বিয়োগ করা যায়।
৫) রূপান্তর:
রেকটিফায়ারের সাহায্যে এসি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে রূপান্তর করা যায়। ডিসি কারেন্টকে সহজে এসি কারেন্টে রূপান্তরিত করা যায় না আর করা গেলেও অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। ডিসি কারেন্টকে সহজে এসি কারেন্টে রূপান্তরিত করা যায় না আর করা গেলেও অনেক কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল হয়ে থাকে।
৬) সাপ্লাই কম-বেশি:
এসি কারেন্টকে ট্রান্সফরমারের সাহায্যে সরবরাহ ভোল্টজ কমানো বা বাড়ানো যায়।
ডিসি কারেন্টের সরবরাহ ভোল্টেজকে কমানো বা বাড়ানো যায় না।
৭) রেগুলেশন:
এসি কারেন্টে রেগুলেশন ভালো নয় কারন এর ভোল্টেজ ড্রপ অনেক বেশি। ডিসি কারেন্টে রেগুলেশন ভালো কারন এর ভোল্টেজ ড্রপ কম।
8) উৎপাদন:
এসি কারেন্ট সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয় ১৬,৫০০ ভোল্ট।
ডিসি কারেন্টে সর্বোচ্চ উৎপাদিত হয় ১,৫০০ ভোল্ট।
কোন কারেন্ট (এসি না ডিসি) বেশি বিপজ্জনক?
ডিসি কারেন্ট ৫০ এম্পিয়ার শক মানে ঠিক ৫০ এম্পিয়ার কনস্ট্যান্ট থাকে।এসি কারেন্ট ৫০ এম্পিয়ার শক মানে শুধু ৫০ এম্পিয়ার নয় বরং আপ-ডাউন করে থাকে। এর ক্ষেত্রে সর্বাধিক কমতে-বাড়তে পারে I সর্বোচ্চ বা শূন্য লেভেলের উপর ভিত্তি করে।এসি কারেন্ট সেকেন্ডে ৫০ থেকে ৬০ বার দিক বদলায় যার ফলে যখন মানুষের হার্টের মধ্য দিয়ে যায় তখন এই কম্পন হার্টের স্বাভাবিক কম্পোনের উপর আরোপিত হয়। ফলে হার্ট অসংলগ্নভাবে কাঁপতে থাকে যা স্বাভাবিক রক্ত চলাচলকেবাঁধাগ্রস্থ করে। এই ঘটনাকে Ventricular Fibrillation বলে।যদি এসি কারেন্ট হার্ট দিয়ে না গিয়ে ব্যাক্তির হাত দিয়ে ঢুকে পা দিয়ে যায় সেক্ষেত্রেও এসি কারেন্ট মারাত্মক। মানুষের শরীরের রোধ ডিসি কারেন্টের ডিসি কারেন্টের জন্য সমান থাকলেও এসি কারেন্টের জন্য কমে যায়। এসি কারেন্টের ফ্রিকুয়েন্সি এই বিশেষ রোধ ইম্পিডেন্সকে কমিয়ে দেয়। ফলে এসি কারেন্ট এর শকের প্রভাবও ডিসি কারেন্টের চেয়ে বেশি।এসি কারেন্টের ফ্রিকুয়েন্সি শরীরের পেশিগুলোকে সংকোচন করে ফেলে যার ফলে শরীর কে কারেন্ট লাইনের সাথে আটকে রাখতে সহায়তা করে।ডিসি কারেন্টে প্রথম থেকে কনস্ট্যান্ট গতিতে চলেতাই এক্ষেত্রে কারেন্ট শুরুতেই হঠাৎ করে দেহকে টেনে ধরে এবং সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া বলের কারনে মানুষ ছিটকে পড়ে।
আশাকরি সবাই বুঝতে পেরেছেন।এর পরও যদি কারো বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এ জানাবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাই সুস্থ থাকেন ভাল থাকেন।
Pingback : Rectifier (রেক্টিফায়ার) | BAT
Pingback : বৈদ্যুতিক মোটর এবং এর বিস্তারিত আলোচনা | BAT